উঠতি কবিদের বলি

by Rabiul Awal on October 9, 2017

আমার কোন ধারালো অস্ত্র নেই, বলতে গিয়ে অস্ত্র শব্দের বানানেই বিভ্রান্ত হলাম।
পরেই মনে পড়লো শব্দই একমাত্র অস্ত্র যার কোন বিনাশ নেই। মাঝে মধ্যে ক্ষোভ জাগলে তীর ছুড়ে দেই শব্দের, বিঁধে দেই সমগ্র ভালোবাসার বুকে।
এন্টিভায়োলেন্স যেহেতু ভায়োলেন্সের বাহিরে নয়, আমার শব্দগুলোও চিৎকার করে উঠে, সহিংস শব্দ যুদ্ধে রণক্ষেত্র টকটকে লাল করে দিতে উদ্যত হয়। শব্দেই বেঁচে ছিলাম, থাকি, থাকবো এবং শব্দেই মরে যাবো।

১১ আগস্ট ২০১৭ সাজ্জাদ হোসেন

যেসব কবিরা ফেসবুকের আয়তাকার রাইটিং বক্সে কবিতা লেখবার বসেন নিয়ম কইরা এবং লেখা আসা মাত্রই এখানটায় টুপ কইরা লেইখা ফালান কিংবা এডিট কইরা বাজারে ছাইড়া দেন – এ চর্চা ভালো নয় বলে আমি মত প্রকাশ করতাছি। বলা যাইতে পারে এসব কবিদের দিয়ে খুব বেশিদিন কবিতা হবে না কিংবা এ বদ অভ্যেস, অল্পতেই সৃষ্টি সামগ্রিকের হাতে তুলে দেওয়া লোকেদের দিয়ে কোন ভালো সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে সুবিস্তার আলাপ হওনের প্রয়োজন।

কবিতাসহ নানানসব সৃষ্টি কিংবা ক্রিয়েটিভ এক্টিভিটিজ একটু দেইখা শুইনা বয়স হইলে বাজারে ছাড়ন উচিত। এইগুলানতো ভাবনা, মস্তিষ্কের উৎপাদন, প্রতিভা দিয়ে করা কাজ, কন্সেপ্টের একটা দৃশ্যমান রুপ, ভিজুয়াল কিংবা অন্য কিছু; এগুলারে একটু সময় দেওন ভালো ব্যাপার, অভিজ্ঞতা তো একটা বিষয়ই সাথে রিশেইপিং জিনিশটারও সুযোগ থাকে। তরুণ বয়সে কবিরা গদগদ হইয়া এইখানে কবিতা প্রচার করতে পারেন। জনপ্রিয়তা যখন বাজারে মিলতেছে তো আপনিও একটু ভাগ পাইলেন, মন্দ তো না। ফেসবুকে দুচারদশ কবিতা কইরা দুচারদশজন বন্ধু আর শিল্প সমজদার লোক, বুদ্ধিজীবী, নারীবাদী, কোলকাতার দুয়েকখান বাংলা ভাষার কবিলোগ, নারী/পুরুষ বান্ধব কিংবা প্রেমিকা অর্জন সম্পন্ন হইলে তাদের উচিত কাগজে লেখালেখি স্টার্ট করা, কিংবা অইযে নোটরাখার এপগুলাতেও লেখা জমাই রাখা, অপেক্ষা করা, দুয়েকটা কবিতা ফেসবুকবাজারে দিয়ে জনগনের ঢেউটা ধরে রাখা আর বাকিসব কন্টেন্ট মাসপুরাইয়া কিংবা তিনমাসে বা ছমাসে বা বছরান্তে লিটারেচার রিলেটেড ওয়েবে পাবলিশ করা কিংবা বই প্রকাশ করা কিংবা প্রকাশ না করা কিংবা জীবনানন্দ দাশ লোকটার মতন ট্রাংকে ফালাইয়া রাখা কিংবা অরুন্ধতীর মতন ম্যালাদিন পর একখান বই লেখা কিংবা যাইচ্ছেতাই করা। কথা হইতাছে দুনিয়াবি ফেসবুকে মইজা থাকনটা ঠিক না – এইটা আমরা নিশ্চিত কইরা বলবার পারি। আপনি ফেসবুকপাড়ায় কবিতা প্রকাশ বিরত রাইখা লেখালেখি চালাইয়া দেখবার পারেন যে মিছিলের ভাড়াতে জনগণের মতন পাঠকগুলান ছাড়া আপনার শব্দ আপনারে আগাই নিতে পারে কিনা, আপনার দর্শনশব্দচিৎকার নিঃসঙ্গতায় টিইকা থাকে কিনা কিংবা একটা ঘোরলাগা ব্যাপার থেইকাই নয় শুধু, নয় প্রেমিকাদের গদগদ ব্যক্তিগত বার্তা- কবিতার ময়দানে আপনি একলাই হাঁইটা বেড়াইতে পারতেছেন কিনা সেটাও উঠতি কবি হিশেবে আপনারে মাথায় রাখতে হবে। ব্যাপারটা কবিদের জন্যযে তা না, সব সৃষ্টিশীললোকেরেই একটু ডেপথে গিয়ে ভাবতে হবে, আইজ থেকে দশ বছর পরে কি হবে এসব না ভাবা লোক হইলো বোকচোদা। এখন ক্রিয়েটিভ আর্টের বাজার তইরি হইছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব পড়ানো হয়, তরুণদের প্যাশন হইয়া উঠছে ক্রিয়েটিভ কাজকম্ম – তো এগুলা কিভাবে ভালো করন যাইবো সেই বিষয়ে বুদ্ধিভিত্তিক আলাপেরও প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে আমাদের মতন গরিব দেশে এসবরে কিভাবে একটা ইন্সটিটিউশনাল এপ্রোচে দাঁড় করানো যায়, এসব টিকাইয়া রাখা, এখান থেকে অর্থ উৎপাদন, বাজার ধরে রাখা এগুলা বুদ্ধিজীবী সমাজ জাতীয় লোকেদের সুবিস্তার আলাপ করন দরকার। এবং ক্রিয়েটিভ আর্টের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, প্রচার, ক্রিটিককরণ কিংবা উৎসবকরণ সবকিছুতেই টেকনোলজির একটা আগাগোড়া ইনভলমেন্ট যেহেতু দৃশ্যমান আছে সেক্ষেত্রে অনলাইনে কিভাবে এসব থাকবে, সার্ভাইভ করবে, বাজারটা কিভাবে সম্প্রসারিত হইতাছে এর প্যাটার্নটা কি এবং কেমন, এর সোশ্যাল ইম্প্যাক্ট কি, এগুলো বাস্তবিক জীবনে কেমন ইম্প্যাক্ট রাখতেছে সেগুলো নিয়ে আলাপ হতে হবে। এইসব আলাপে বুড়ালোকদের সাথে আমাদের মতন জোয়ানলোকেরাও লাগবে। বুড়া বুদ্ধিজীবীরা টেকনোলজি কম বুঝেন, তো এইখানে আবার আমাদের বাজার আছে।

স্পেসিফিক জিনিশকে স্পেসিফিক স্পেসে রাখার দিকে নজর দিতে হবে। যেমন কবিতারে সাহিত্য পত্রিকায়, বইয়ে কিংবা ম্যাগাজিন কিংবা অনলাইন লিটারেচার কর্ণারে, যেন দশবিশচল্লিশ বছর পর কবিদের হাত ধইরা আমরা সময়টারে ছুঁতে পারি।

ভালো জিনিশি বাজারে ছাড়াতো বিষয়ই, সাথে জরুরি বিষয় হইল সামাজিক বাদ বিবাদে না জড়াইয়া কবিতা করা। বিষাদাগার করা খুবই বাজে অভ্যেস। আর আড্ডার দিকে দাবিত হওনও উচিত; নিজের ভাবনার প্লট লোকের সাথে আলাপ করা; কবিতার পলিটিক্যাল রুপ থাকে, আইডিওলজিক্যাল রিপ্রেজেন্টেশনও থাকবে, সমাজ আর কালচারে ডকুমেন্টেশন হিশেবেও কবিতা কাজ করে, তো আলাপ থেইকা রিশেইপিং হইতে পারে, সেইখান থেকে একটা ফিল্টারিং হইতে পারে – এইটা মন্দ না। নারী বান্ধবীরা সচরাচর হয়না কবিদের ভালো ক্রিটিক – এইটাও মাথায় রাখা লাগবে। কবিদের কিংবা সকল লোকেরই ভক্তি, পূজা অর্চনা, চরণধুলাকে ভয় পাইতে হবে। প্রেমিকাদের ভক্তি- সেটা গোপনে গোপনে; সম্মুখে নয়। কবিতা করাতো কাজ, কাজ কম্ম থেইকা হয় প্রোডাক্ট, ফেসবুকে প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এসিউরেন্স সেন্টার না – এইটা হইলো আলাপের বটমলাইন।

পুরো একটি জন্ম আমি না ঘুমিয়ে
হেঁটে হেঁটে যেতে চেয়েছিলাম গভীরে
এবং আরো গহীন অরণ্যে,
যেখানে আর কিছু নেই, আছে-
প্রেম, আমার জন্য তোমার এবং তোমার জন্য আমার। কিংবা যত অন্ধকার পেরোলে খুঁজে পাবো
আমাদের জন্য তোমাদের-
তোমাদের জন্য আমাদের
এবং
মানুশের জন্য মানুশের প্রেম। সুতরাং এসো, আরো গভীরে গহীনে,
সন্ধান করি আফ্রোদিতির।
বাতিল করি-
রাষ্ট্র ধর্ম রাজনীতি এবং সব সীমান্তরেখা,
পুতে ফেলি মারণাস্ত্র, যত গোলাবারুদ ও অন্যান্য।

০৯ জুন ২০১৭ সাজ্জাদ হোসেন

একটা লক্ষনীয় বিষয় আপনাগোরে বলি। আমি যখন কলেজে পড়তাছিলাম তখন আমাদের চউখে দেখা মিললো একঝাঁক গল্পকার। সবলোকেই গল্প লেইখা একটা ম্যাসাকার কইরা ফেলছিলো। লেখক হুমায়ুন আহমেদ বিশাল এই গল্পকারসমাজ তইরিতে ইনফ্লুয়েন্স ক্রিয়েট করছিলেন বলে আমার ধারণা। দেখেন হাজারে সেইসব গল্পকার যারা অধিকাংশ লেখা শুরু করছিলেন মধ্যবিত্ত সংকট, ক্লাসঘর, বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়ের টং কিংবা প্রেমিকা কিংবা বেকারত্ব কিংবা হুমায়নিক বোহেমিয়ানগিরি, হিমুগিরিটাইপ কিছু- সেসবের এখন আর দেখা মিলে না। এইটা কিন্তু একটা সংকট। বাজারটা পইড়া যাওনের সংকট। আমিতো বিশ্বাস করি যেসব পোলাপান লেখতে শুরু করছিলো তাগো দুচারপাঁচ ভালো কিছু হইতে পারতো। কিন্তু ফেসবুক বাজারে কোন জিনিশ যে কখন ঠেকনা পায় তার কি ঠিকঠিকানা আছে। এখন অইসব গল্পকারদের আমি মিস করি। দেখা যাবে অইসব গল্প ফেসবুকে আর্কাইভ ছাড়া আর কোথাও নাই। জাদুকরতো আর সবলোক হয়না – সেটাও মাথায় নিতে হবে। সেহিশেবে কবিদের বাজার দীর্ঘমেয়াদি আছে, বাজার যে হুট কইরা নাইমা আসবে অমন সম্ভাবনাও কম। কবিতা তো শর্ট হইয়া যাইতাছে, পোলাপান সহজে কবিতা করতাছে – আর মেয়েলোকেরা কবিতা ভালোবাসে বেশি এইটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বাংলাব্লগের সে সোনালী অতীতের কথা কি আমরা ভুইলা গেছি? ইন্টারনেট পাড়ায় আজকাল বাংলা ভাষায় যা কিছু কন্টেন্ট মিলে তার অধিকাংশই কি গত দুচারপাঁচ বছর আগের কাজ নয় কি? এইতো দল বাইন্ধা পোলাপান ব্লগিং কইরা, পাতার পর পাতা লেইখা, সেক্যুলারিজম, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ, ইতিহাস, ভ্রমণ, গল্পকবিতা, দেশবিদেশের নানান গল্প কইরা বেড়াইছে এসব নব্বইয়ের দিকে আমরা যারা জন্মাইছি তাগো কারোরই চোখ এড়ানোর বিষয় নয়। অথচ সেই বাংলা ব্লগ আজ মরমর, তার হইছে ক্যান্সার। চতুর্মাত্রিক, সামু, ইস্টিশন কিংবা সচলায়তন কোনটাই ঠিকঠাক দাঁড়াইয়া নাই এখন আর। আমাদের ইনস্টিটিউশনাল এডুকেশন সিস্টেম খুব বোকাচোদা ধরণের, এইখান থেইকা পোলাপান যে খুব একটা কিছু শিখা দেশ উদ্ধার কইরা ফেলতেছে, দেশেদেশে জ্ঞানবিপ্লব হইয়া যাইতাছে, রিজার্ভে জমা হইতাছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার- এমন কোন অবস্থা দৃশ্যমান নাই। সেই জায়গায় বাংলা ব্লগ একটা চতুর্মাত্রিক কিংবা উন্মুক্ত জ্ঞান চর্চার প্ল্যাটফর্ম হিশেবে তরুণদের মধ্যে একটা আন্দোলন হিশেবে প্রকাশিত হইছিলো। প্রশ্ন কেন মইরা গেলো বাংলা ব্লগ? ক্যান এই সোনার হরিণ টিকাইয়া রাখা গেলো না? এতো দ্রুত আমাদের সবকিছু উইঠা যায় কিংবা পইড়া যায় কেন? সেই বাংলা ব্লগের কবরের উপর এখন দাঁড়াইয়া আছে শয়েশয়ে অনলাইন পোর্টাল। উপরেনিচেডানেবাঁয়ে অনলাইন পোর্টালগুলার সস্তা কন্টেন্ট দেইখা আজকাল বমি আসে। এসব নিয়ে সুবিস্তার বিশ্লেষণ এমনকি একাডেমিক গবেষণারও প্রয়োজন আছে। একটা অদ্ভুতুড়ে আনসার্টেইন রাষ্ট্রের নানান সংকট তরুণদেরকে মুক্তির নানান পথে দাবিত করে। যেসব লোক আজ কবি, গদ্যকার, ব্লগার, অনলাইন এক্টিভিস্ট, নারীবাদী, বিপ্লবী তারা বেবাকেই সময়ের সংকটের একটা প্রতিবাদ, একটা পালটা আঘাত। দেশের ভঙ্গুর আর মুমূর্ষু দশা থেইকা মুক্তির লাইগা আমাদের কবিদের প্রয়োজন, প্রয়োজন তরুণদের সমাজমুখীজ্ঞানমুখীপ্রযুক্তিমুখীপরিবর্তনমুখী চিন্তাকে সুপথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, ম্যাচিউরড করে তোলা, দীর্ঘায়িত করা।

ফেসবুক হইলো ক্যাওটিক প্লেইস, রাজনৈতিক দলের ব্যানারের মতন কিছু একটা কিংবা কিছু একটা যেটা ইউপেমেরাল – বিদ্যুতের মতন। সকল রকম সৃষ্টিকে জড়ো করে রাখবার স্পেসিফিক জায়গা থাকাটা জরুরি।

ফেসবুকে সব কন্টেন্ট ছাড়া কবির ভবিষ্যত নিয়ে তিনি চিন্তিত হইতে পারেন। তবে উঠতি কবিদের জন্য সবচে ভালো কথা হলো চটি সাইজের বইপত্র টাইপ কিছু করা। এইগুলা নারী বান্ধবীদের, বুড়া অধ্যাপকদের কিংবা শিল্প সাহিত্য বুঝা লোকেদের কিংবা পত্রিকার সম্পাদকদের কিংবা উঠতি কবিদের কিংবা বুদ্ধিজীবীদের পাঠাই দেওয়া। ফেসবুকে সাহিত্যগিরিকবিগিরিশিল্পগিরিবিজ্ঞানগিরিক্রিয়েটিভগিরি করার জায়গা না। এইটা হইলো ক্যাওটিক হাট; রাজনৈতিক জনসভা, সমুদ্রের ঢেউ কিংবা মিছিলের ভাড়াটে জনগণ। স্পেসিফিক জায়গায় সৃষ্টি জমা রাখতে হবে – তাইলে শিল্প আজ কদর না পাইলেও দুইদশক পরে কদর পাইতে পারে কিংবা কদর জরুরি না; যারা খোঁজ করবে তারা সহজে সন্ধান পাইবে কিংবা কাজ মরবে না।

গোলাপের নীচে নিহত হে কবি কিশোর আমিও ভবঘুরেদের প্রধান ছিলাম।
জ্যোৎস্নায় ফেরা জাগুয়ার চাঁদ দাঁতে ফালা ফালা করেছে আমারও প্রেমিক হৃদয়!
আমিও আমার প্রেমহীনতায় গণিকালয়ের গণিকার কাছে ক্লান্তি সঁপেছি
বাঘিনীর মুখে চুমো খেয়ে আমি বলেছি আমাকে উদ্ধার দাও।
সক্রেটিসের হেমলক আমি মাথার খুলিতে ঢেলে তবে পান করেছি মৃত্যু
হে কবি কিশোর
আমারও অনেক স্বপ্ন শহীদ হয়েছে জীবন কাঁটার আঘাত সয়েছি আমিও।
হৃদয়ে লুকানো লোহার আয়না ঘুরিয়ে সেখানে নিজেকে দেখেছি
পাণ্ডুর খুবই নিঃস্ব একাকী!
আমার পায়ের সমান পৃথিবী কোথাও পাইনি অভিমানে আমি
অভিমানে তাই
চক্ষু উপড়ে চড় ইয়ের মতো মানুষের পাশে ঝরিয়েছি শাদা শুভ্র পালক!
হে কবি কিশোর নিহত ভাবুক, তোমার দুঃখ আমি কি বুঝি না?
আমি কি জানি না ফুটপাতে কারা করুণ শহর কাঁধে তুলে নেয়?
তোমার তৃষ্ণা তামার পাত্রে কোন কবিতার ঝিলকি রটায় আমি কি জানি না
তোমার গলায় কোন গান আজ প্রিয় আরাধ্য কোন করতলও হাতে লুকায়
আমি কি জানি না মাঝরাতে কারা মৃতের শহর কাঁধে তুলে নেয়?
আমারও ভ্রমণ পিপাসা আমাকে নারীর নাভিতে ঘুরিয়ে মেরেছে
আমিও প্রেমিক ক্রুবাদুর গান স্মৃতি সমুদ্রে একা শাম্পান হয়েছি আবার
সুন্দর জেনে সহোদরাকেও সঘন চুমোর আলুথালু করে খুঁজেছি শিল্প।
আমি তবু এর কিছুই তোমাকে দেবো না ভাবুক তুমি সেরে ওঠো
তুমি সেরে ওঠো তোমার পথেই আমাদের পথে কখনো এসো না,
আমাদের পথ
ভীষণ ব্যর্থ আমাদের পথ।

গোলাপের নীচে নিহত হে কবি কিশোর আবুল হাসান