আহমেদ ছফা ১

by Rabiul Awal on May 14, 2017

আহমদ ছফার ৪/৫ টা উপন্যাস আমি পড়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শেষে এবং দ্বিতীয় বর্ষের শুরুর দিককার সময়ে। অর্ধেক নারী, অর্ধেক ইশ্বরী আমার কাছে চমৎকার লেগেছে। ঢাকা শহর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ কেন্দ্রিক এলাকা, প্রেম, ভাঙ্গাগড়া, দোলাচলে এই উপন্যাসের শামারোখ চরিত্র আমার মনে দাগ কেটেছে খুব। তবে সবচে মজা পেয়েছি গাভীবৃত্তান্ত পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়ে অসামান্য এক লেখা। খুবই খোলামেলা উপন্যাস। চাটুকারিতা, ভাবালুতা, নার্সিসিজম মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যদের চেহারা মনে করে করে পাতা উল্টাইয়া গেছিলাম। আলী কেনানের উথান পতন। এক মাজারকে ঘিরে আলী কেনানের গল্প এগুবে। দেখা যাবে মানুষের অযাচিত বিশ্বাস কিভাবে এক তুচ্ছ মানুষকে বিশাল করে তুলে, ইন্দ্রজালের মতন গল্প। ছফার শেষ উপন্যাস পড়েছিলাম মরণ বিলাস। ছফার লেখালেখি অকপট। যেসব সত্য আমরা দেখি কিন্তু সেগুলোকে রিকগনাইজ করিনা; সেসব সত্য নিয়ে ছফা প্রচুর লিখেছেন। মধ্যবিত্ত জীবনে ছকবাধা গল্পের বাইরে জীবনের অন্যান্য যেসব অংশ, নিদারুণ সত্য, অনুভব আমাদেরকে ঘিরে আছে, সেসব নিয়ে যারা লেখালেখি করেন আমার তাঁদের খুব ভাল্লাগে। ছফা, আজাদের বইপত্র মানুষজনের পড়া উচিত। আমার তো মনে হয় সমাজের অধিকাংশ মানুষ একটা ছকবাধা অনুভবের মধ্য দিয়ে বড় হয় এবং ছকবাধা গল্পকথা পরে মরে টরে যায়। প্রশ্ন করবার, অকপট হয়ে উঠবার, প্রথাবিরোধ করবার মতন মানুষ হতে গেলে ছফা আজাদ ঘরানার লেখকদের দিকে তাকানোটা জরুরি।